
করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত ছিল পর্যটন বাণিজ্য। ২০২০ সালে এ খাতের ব্যবসা বলতে গেলে শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ’২১ সালে। নতুন বছরে কি পর্যটন ব্যবসা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? আবার ভালো একটি বছর কাটানোর পর শেয়ারবাজার কি এ বছর নতুন উচ্চতায় উঠবে, নাকি হতাশ হতে হবে বিনিয়োগকারীদের? ’২১ সালে রেকর্ড মুনাফা করা ব্যাংক খাত ’২২ সালে কি আরও বেশি ব্যবসা করবে? আবার উদ্যোক্তাদের পরিকল্পনাই–বা কী? এসব নিয়ে নতুন বছরের প্রত্যাশা নিয়ে বিভিন্ন খাতের ছয়জনের অভিমত। কথা বলেছেন সুজয় মহাজন
সদ্য বিদায়ী ২০২১ সালটি ছিল শেয়ারবাজারের জন্য ভালো একটি বছর। এ বছরটিতে আমরা শেয়ারবাজারে বড় একটি র্যালি দেখেছি। তাতে বছরজুড়ে প্রধান মূল্যসূচকটি প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর শেয়ারবাজারে বড় র্যালি বা গণর্যালি হয়েছে বলে তাতে কমবেশি সব শেয়ারের দামই বেড়েছে। এর মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে স্বল্প মূলধনি বা ছোট কোম্পানির শেয়ারের দাম। সেই তুলনায় ভালো মৌলভিত্তি ও বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কম বেড়েছে।
গত বছর শেয়ারবাজারে বড় র্যালি হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। তার মধ্যে অন্যতম ব্যাংক খাতে আমানতের সুদের হার কমে যাওয়া, অতিরিক্ত তারল্য, বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়া, করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থবিরতা। এসব কারণে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তারা শেয়ারবাজারে টাকা খাটিয়েছে। তার ফলে সূচক ও লেনদেনে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে।
নতুন বছরে তথা ২০২২ সালে বাজারে এ রকম গণর্যালি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে আমি মনে করি, এ বছর ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ আমরা দেখছি, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায় স্বাভাবিক সময়ের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ভালো ব্যবসা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায় যারা বেশি ভালো করবে, শেয়ারের দামের উত্থানে তারাই এগিয়ে থাকতে পারে। ব্যবসা ভালো হলে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর মুনাফার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। তাই আমার ধারণা, এ বছরটিতে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো দাপুটে অবস্থানে থাকবে। তাই নতুন বছরে শেয়ারবাজার থেকে ভালো মুনাফা করতে হলে বিনিয়োগকারীদেরও কোম্পানি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
গত বছর ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ছিল। এ কারণে আমরা দেখেছি বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভালো মৌলভিত্তির অনেক কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এ বছর তেমনটি হবে না বলে আমাদের ধারণা।